তারেক জিয়া ও অন্যান্যরা গ্রেফতার

wikileaks৭ই মার্চ রাতে বাংলাদেশের পুলিশ প্রায় একই সময়ে গ্রেফতার করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমান (সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র) , সাবেক স্বাস্হ্যমন্ত্রী ড: খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং চট্টগ্রাম আওয়ামীলীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীকে। আরো গ্রেফতার করা হয় জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সাংসদ ড: সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং বাংলা দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকার সম্পাদক আতিকুল্লাহ খান মাসুদ। তারেক কে ৮ ই মার্চ আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নেয়া হয়।

৭ই মার্চ রাতে সাড়ে এগারোটার দিকে যৌথ বাহিনী দুই দফা শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে যায় আওয়ামীলীগ নেতাদের খোঁজ করতে যাদের মধ্যে শেখ হাসিনার কিছু আত্মীয়ও রয়েছে। শেখ হাসিনার নিরাপত্তা প্রধান মেজর জেনারেল (অব) তারেক সিদ্দিকী বলেন তিনি প্রথমবার সাদা পোশাকে আসা যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ঢুকতে দেননি।তারেক সিদ্দিকী নবম ডিভিশনের জেনারেল মাসুদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানান। তারেক সিদ্দিকী জানান এর একঘন্টা পর যৌথ বাহিনী ফিরে এসে দরজা ভাংগার হুমকি দিলে "আমি তাদেরকে ঢুকতে দিতে বাধ্য হই।“ তারেক সিদ্দিকী জানান তিনি এর মধ্যেই শুনেছিলেন যে তারেক রহমান গ্রেফতার হয়েছেন। সরকার সম্ভবত তারেককে গ্রেফতারের ব্যাপারটা ব্যালেন্স করার চেষ্টা করছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। যৌথ বাহিনী সুধা সদন থেকে কাউকে গ্রেফতার না করেই চলে যায়।

৯ই মার্চ সকালে পুলিশ আওয়ামী লীগ যুগ্ম মহাসচিব ওবায়দুল কাদের এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি সাহাবুদ্দীন লালটুকে গ্রেফতার করে। পুলিশ দূতাবাসকে জানায় ঢাকা থেকে নয় জন ছাত্রদল কর্মী ও বগুড়ার দশ জন যুব লীগ [দল? – অনুবাদক] কর্মীকে তারেক রহমানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ আয়োজনের চেষ্টা করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে দুই জন আইনজীবিকে গ্রেফতার করা হয় মহিউদ্দিন চৌধুরীর গ্রেফতারের প্রতিবাদের চেষ্টা করায়।

৮ ই মার্চে প্রচার মাধ্যমে ৫০ জন ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। এঁরা সরকারের দ্বিতীয় দফা দুর্নীতি দমন অভিযানের টার্গেট হবেন বলে দাবী করা হচ্ছে। এই তালিকায় আছেন তারেক রহমান, ডঃ মোশাররফ হোসেন ও সে রাতে গ্রেফতারকৃত অন্যরাসহ সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী নাজমুল হুদার স্ত্রী ও দূতাবাসের আইনজীবি সিগমা হুদা, হা মীম গার্মেন্টসের মালিক এ কে আজাদ (বাংলাদেশ চেম্বার অভ ইন্ডাস্ট্রিজ-এর সভাপতি), আওয়ামী লীগের ধর্ম উপদেষ্টা শেখ আবদুল্লাহ এবং খালেদা জিয়ার ছোট ভাই ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার শামিম ইস্কান্দার। এই তালিকার শুদ্ধতা বাংলাদেশ সরকার নিশ্চিত করেনি। তালিকায় নাম থাকা জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু [দূতাবাসের] রাজনৈতিক কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন যে পুলিশ তাঁর বাসায় তল্লাশি চালিয়ে তাঁর খোঁজ করার পর তিনি গ্রেফতারের ভয়ে রাতে বাড়ি ফেরেননি। মঞ্জু জানিয়েছেন তিনি তাঁর প্রতিনিধির মাধ্যমে দূর্নীতি দমন কমিশনের চাহিদামত সম্পদের যে কোন বিবরণী দিতে প্রস্তুত আছেন। তবে তিনি নিজে তা জমা দিতে ভয় পাচ্ছেন, কারণ তাঁর দাবি অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতে দূর্নীতি দমন কমিশনে সম্পদ বিবরণী দাখিলের পরপরই বেশ কিছু বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গ্রেফতার বরণ করেন।

জনগণের মধ্যে তারেক রহমানের গ্রেফতারের প্রতিক্রিয়া ব্যাপকভাবে ইতিবাচক। সরকার হাই প্রোফাইল রাজনীতিক এবং ব্যাবসায়ীদের অব্যাহতভাবে টার্গেট করে যাওয়ায় প্রভাবশালীদের মাঝে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি আনিসুল হক আমাদের বলেছেন , তিনি অন্যান্য ব্যাবসায়ী এবং চেম্বার অব কমার্সকে সাথে নিয়ে সরকারকে জানাতে চান যে, ব্যবসায়ীরা গ্রেফতারের ভয়ে ব্যবসায় আস্হা হারাচ্ছেন যা কিনা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
রেফারেন্স আইডি: 07DHAKA396
তারিখঃ ১১/০৩/২০০৭
বিষয়: তারেক জিয়া ও অন্যান্যরা গ্রেফতার
ক্যাটেগরিঃ গোপনীয়

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন