মইনের উপদেষ্টা ছিলেন অধ্যাপক আতাউর

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এমন একটি ধারণার সৃষ্টি হয়েছিল যে, সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদ দেশ চালাচ্ছেন। ওই সময় তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবং মিডিয়ায় ব্যাপক উপস্থিতিতে ওই ধারণার জন্ম হয়। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আতাউর রহমান ছিলেন তার অন্যতম উপদেষ্টা।
২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট ওয়াশিংটনে পাঠানো তারবার্তায় ঢাকায়
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স গীতা পাসি এ কথা উল্লেখ করেন। গত ৩০ আগস্ট উইকিলিকস এ তথ্য ফাঁস করে।
ওই বার্তায় বলা হয়, 'গীতা পাসি সম্প্রতি সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ফারুক সোবহানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ফারুক সোবহান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন আস্থাবান ব্যক্তি ছিলেন। সাক্ষাৎকালে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন।'
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়ে ফারুক সোবহান তখন গীতা পাসিকে জানান, তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা আছে। একটি মামলা নাকোচ হলেও অন্য মামলাগুলো চলবে। তিনি জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ সংকট এবং বন্যাসহ অসংখ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে।
ওয়াশিংটনে পাঠানো তারবার্তায় গীতা পাসি বলেন, 'আমরা বিভিন্ন মিডিয়ায় সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদের ব্যাপক উপস্থিতির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি। মিডিয়ায় প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদের চেয়ে মইনের উপস্থিতি অনেক বেশি হওয়ায় এ রকম একটা ধারণা জন্মেছে যে, মইনই দেশ চালাচ্ছেন। সেনাপ্রধান বারবার জনমম্মুখে আসছেন। ত্রাণ সাহায্য, দুর্নীতি, লীগ খেলা প্রভৃতি নিয়ে বক্তব্য রাখছেন।'
অন্যদিকে ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম ৬ মাসে ফখরুদ্দীন আহমদকে মিডিয়ায় তেমনটি দেখা যায়নি। এতে এমন ধারণার সৃষ্টি হয় যে, সেনাপ্রধান মইনই দেশ চালাচ্ছেন।
ফারুক সোবহান জানান, 'ফখরুদ্দীন আহমদ প্রতিজ্ঞা করেছেন, সরকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি এখন মিডিয়ার সামনে ঘন ঘন হাজির হবেন যাতে ওই ধারণার অবসান ঘটে।'
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব জানান, 'মইন উ আহমেদের চারপাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আতাউর রহমানের মতো আরও বেশ কয়েকজন স্বনিয়োজিত উপদেষ্টা রয়েছেন। তারা দেশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার জন্য তাকে উৎসাহিত করছেন। ওই উপদেষ্টারা সেনাপ্রধানকে এমনই ধারণা দিচ্ছেন যে, একমাত্র তিনিই পারেন দেশকে বাঁচাতে।'

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন