নোবেল পুরস্কারজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস সেনা সমর্থিত জাতীয় ঐকমত্যের সরকারে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দৃঢ়তার সঙ্গে নাকচ করেছিলেন। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা চলাকালে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে এক মার্কিন কূটনৈতিক তারবার্তায় এ কথা বলা হয়। ২০০৭ সালের ৮ এপ্রিল ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে এ কথা বলা হয়। ওই বৈঠকে ইউনূস দূতাবাসের কর্মকর্তাদের অবহিত করে বলেছিলেন, আমি আমার মতো করে জনগণের কাছ থেকে ক্ষমতা অর্জন করতে চাই। জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন সেনা অভ্যুত্থানের শামিল বলে তিনি (ইউনূস) কর্মকর্তাদের কাছে মন্তব্য করেছিলেন। আমি তাতে অংশ নিতে চাই না_ ইউনূসের এমন বক্তব্য তারবার্তায় উল্লেখ করা হয়েছিল।
সেনা কর্মকর্তারা ক্ষুদ্রঋণের প্রবর্তককে জাতীয় ঐক্যের সরকারের
জন্য আদর্শ ঐকমত্যের নেতা হিসেবে চিহ্নিত করেন। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুতে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে পাঠানো কূটনৈতিক বার্তায় কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনকে এ তথ্য জানিয়েছিলেন।
তাকে এ প্রস্তাব দেওয়ার পর থেকেই ইউনূস এ ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ার ব্যাপারে অনড় ছিলেন। ওই সময় দূতাবাসের পাঠানো বেশ কিছু তারবার্তায় বলা হয়, বিএনপি মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমুসহ অনেক রাজনীতিবিদ প্রস্তাবিত ঐক্যের সরকারে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন।
বহুল আলোচিত ওয়েবসাইট উইকিলিকস ২০১১ সালের ৩০ আগস্ট অন্যান্য অনেক তারবার্তার সঙ্গে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে পাঠানো এ কূটনৈতিক তারবার্তাটিও ফাঁস করে দেয়। এতে বলা হয়, ২০০৭ সালের ৫ আগস্ট এক বৈঠকে সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ সেনা অফিসার নীতিগতভাবে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের ব্যাপারে সম্মত হলে পদক্ষেপটি নতুন করে গতি পায়। দুর্নীতি দমন কমিশনের অ্যাটর্নি সে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তাদের আলোচনার বিষয়টি অবহিত করেন। সে সময় তিনি (অ্যাটর্নি) সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছিলেন। ওই বছর ৭ আগস্ট পাঠানো অন্য এক তারবার্তায় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স গীতা পাসি লিখেছিলেন, তার (এসিসি অ্যাটর্নি) মতে, বৈঠকে উপস্থিত সেনা কর্মকর্তারা জাতীয় ঐক্যের সরকারের ধারণা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং অবশেষে তারা সম্মত হন যে, সামরিক আইন জারি না করেও এটা (দল) বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
তারবার্তায় উল্লেখ করা হয়, ২০০৭-০৮ সালে জরুরি অবস্থা চলাকালে কতিপয় এসিসি আইনজীবী রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সেনা নেতৃত্ব দানকারী দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে যুক্ত ছিলেন।
বিএনপির সাবেক সাংসদ গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী দলের সংস্কারবাদী নেতা আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার উপদলের সঙ্গে যোগ দেন। যদিও দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে চলছিলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তারা ৫ আগস্টের বৈঠকের বরাত দিয়ে তারবার্তায় এসব কথা জানান।
সেনা সমর্থিত দল গঠনের প্রসঙ্গ এনে বার্তায় বলা হয়, জ্যেষ্ঠ জেনারেলদের আলোচনায় উঠে আসে, তদানীন্তন প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদকে যথাস্থানে রেখে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও নবগঠিত পিডিপির সংস্কারবাদীদের নিয়ে একটি বর্ধিত সরকার গঠন করা যেতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদের পদমর্যাদা সরকারি প্রশাসনে সচিবের (উপমন্ত্রী) ওপরে না যাওয়ায় আমু এবং ভূঁইয়া উভয়ে জানান যে, সে অবস্থায় তারা ফখরুদ্দীনের নেতৃত্বাধীন সরকারে অংশ নিতে পারেন না। ২০০৭ সালের ৭ আগস্ট পাঠানো বার্তায় গীতা পাসি আরও লেখেন, যেহেতু তারা (আমু-মান্নান ভূঁইয়া) উভয়ে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাই তাদের বিবেচনায় যিনি নিম্ন পদস্থ তার অধীনে তারা কাজ করতে পারেন না।
উইকিলিকস : সেনা সমর্থিত সরকার
২০০৭ সালের ১৮ মার্চ ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া এ বিউটেনিসকে মান্নান ভূঁইয়া জানিয়েছিলেন, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন এবং মুহাম্মদ ইউনূস হয়তো জাতীয় ঐক্যের সরকারের অংশ হতে পারেন এবং এ সরকার ও সরকারের কার্যক্রমের বৈধতার প্রশ্নে গণভোটের প্রয়োজন হতে পারে। বিউটেনিস আলোচনার পরদিন এ তারবার্তাটি ওয়াশিংটনে পাঠিয়েছিলেন।
মান্নান ভঁূইয়া নিশ্চিত করেছিলেন, সেনাবাহিনী খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে রাজি করাতে পারলে তিনি বিএনপির নেতৃত্ব গ্রহণ করতে সচেষ্ট হবেন। বিউটেনিস তার পাঠানো গোপন মার্কিন কূটনৈতিক তারবার্তায় জানান, তিনি (মান্নান ভঁূইয়া) জাতীয় সরকারের নেতৃত্ব দান, সে সময় ক্ষমতাসীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্থলাভিষিক্ত হওয়া এবং পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের আগে সংস্কারের উদ্যোগ নেবেন।
কিন্তু জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনে দেরি হওয়ায় আমির হোসেন আমু ২০০৭ সালের মাঝামাঝি অধৈর্যের মনোভাব প্রকাশ করেন। আমু বলেছিলেন, তিনি এবং হাসিনাবিরোধী বহু আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়োজনে সামরিক আইন জারি করা হলে কিছু মনে করবেন না। গীতা পাসি তার পাঠানো তারবার্তায় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছিলেন।
সেনা কর্মকর্তারা ক্ষুদ্রঋণের প্রবর্তককে জাতীয় ঐক্যের সরকারের
জন্য আদর্শ ঐকমত্যের নেতা হিসেবে চিহ্নিত করেন। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুতে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে পাঠানো কূটনৈতিক বার্তায় কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনকে এ তথ্য জানিয়েছিলেন।
তাকে এ প্রস্তাব দেওয়ার পর থেকেই ইউনূস এ ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ার ব্যাপারে অনড় ছিলেন। ওই সময় দূতাবাসের পাঠানো বেশ কিছু তারবার্তায় বলা হয়, বিএনপি মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমুসহ অনেক রাজনীতিবিদ প্রস্তাবিত ঐক্যের সরকারে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন।
বহুল আলোচিত ওয়েবসাইট উইকিলিকস ২০১১ সালের ৩০ আগস্ট অন্যান্য অনেক তারবার্তার সঙ্গে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে পাঠানো এ কূটনৈতিক তারবার্তাটিও ফাঁস করে দেয়। এতে বলা হয়, ২০০৭ সালের ৫ আগস্ট এক বৈঠকে সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ সেনা অফিসার নীতিগতভাবে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের ব্যাপারে সম্মত হলে পদক্ষেপটি নতুন করে গতি পায়। দুর্নীতি দমন কমিশনের অ্যাটর্নি সে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তাদের আলোচনার বিষয়টি অবহিত করেন। সে সময় তিনি (অ্যাটর্নি) সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছিলেন। ওই বছর ৭ আগস্ট পাঠানো অন্য এক তারবার্তায় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স গীতা পাসি লিখেছিলেন, তার (এসিসি অ্যাটর্নি) মতে, বৈঠকে উপস্থিত সেনা কর্মকর্তারা জাতীয় ঐক্যের সরকারের ধারণা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং অবশেষে তারা সম্মত হন যে, সামরিক আইন জারি না করেও এটা (দল) বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
তারবার্তায় উল্লেখ করা হয়, ২০০৭-০৮ সালে জরুরি অবস্থা চলাকালে কতিপয় এসিসি আইনজীবী রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সেনা নেতৃত্ব দানকারী দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে যুক্ত ছিলেন।
বিএনপির সাবেক সাংসদ গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী দলের সংস্কারবাদী নেতা আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার উপদলের সঙ্গে যোগ দেন। যদিও দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে চলছিলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তারা ৫ আগস্টের বৈঠকের বরাত দিয়ে তারবার্তায় এসব কথা জানান।
সেনা সমর্থিত দল গঠনের প্রসঙ্গ এনে বার্তায় বলা হয়, জ্যেষ্ঠ জেনারেলদের আলোচনায় উঠে আসে, তদানীন্তন প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদকে যথাস্থানে রেখে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও নবগঠিত পিডিপির সংস্কারবাদীদের নিয়ে একটি বর্ধিত সরকার গঠন করা যেতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদের পদমর্যাদা সরকারি প্রশাসনে সচিবের (উপমন্ত্রী) ওপরে না যাওয়ায় আমু এবং ভূঁইয়া উভয়ে জানান যে, সে অবস্থায় তারা ফখরুদ্দীনের নেতৃত্বাধীন সরকারে অংশ নিতে পারেন না। ২০০৭ সালের ৭ আগস্ট পাঠানো বার্তায় গীতা পাসি আরও লেখেন, যেহেতু তারা (আমু-মান্নান ভূঁইয়া) উভয়ে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাই তাদের বিবেচনায় যিনি নিম্ন পদস্থ তার অধীনে তারা কাজ করতে পারেন না।
উইকিলিকস : সেনা সমর্থিত সরকার
২০০৭ সালের ১৮ মার্চ ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া এ বিউটেনিসকে মান্নান ভূঁইয়া জানিয়েছিলেন, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন এবং মুহাম্মদ ইউনূস হয়তো জাতীয় ঐক্যের সরকারের অংশ হতে পারেন এবং এ সরকার ও সরকারের কার্যক্রমের বৈধতার প্রশ্নে গণভোটের প্রয়োজন হতে পারে। বিউটেনিস আলোচনার পরদিন এ তারবার্তাটি ওয়াশিংটনে পাঠিয়েছিলেন।
মান্নান ভঁূইয়া নিশ্চিত করেছিলেন, সেনাবাহিনী খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে রাজি করাতে পারলে তিনি বিএনপির নেতৃত্ব গ্রহণ করতে সচেষ্ট হবেন। বিউটেনিস তার পাঠানো গোপন মার্কিন কূটনৈতিক তারবার্তায় জানান, তিনি (মান্নান ভঁূইয়া) জাতীয় সরকারের নেতৃত্ব দান, সে সময় ক্ষমতাসীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্থলাভিষিক্ত হওয়া এবং পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের আগে সংস্কারের উদ্যোগ নেবেন।
কিন্তু জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনে দেরি হওয়ায় আমির হোসেন আমু ২০০৭ সালের মাঝামাঝি অধৈর্যের মনোভাব প্রকাশ করেন। আমু বলেছিলেন, তিনি এবং হাসিনাবিরোধী বহু আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়োজনে সামরিক আইন জারি করা হলে কিছু মনে করবেন না। গীতা পাসি তার পাঠানো তারবার্তায় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছিলেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন