বহুরুপী রাজনীতিবিদ মতিয়া চৌধুরি: পল্টন ময়দানে উন্মুক্ত সমাবেশে ঘোষণা দিয়েছিলেন `শেখ মুজিবের চামড়া দিয়া ঢোল আর হাড্ডি দিয়া ডুগডুগি` বানানোর।



১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতা, আলোচিত পার্লামেন্টারিয়ান নূরে আলম সিদ্দিকী বলেছেন, জনবিচ্ছিন্ন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী গং প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সরকার চালাচ্ছে তারাই। আওয়ামী লীগের জোয়ারে ভাটার টান লাগতে শুরু করেছে। 

ষাটের দশকেই আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগের সামনের কাতারে ছিলেন। দীর্ঘ কারাজীবনে বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে কেটেছে তার ১৭ মাস।সেই ছাত্ররাজনীতি করার সময় থেকেই নূরে আলম সিদ্দকী আত্মপ্রত্যয়ী। ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ, ডাকসু ভিপি আ স ম আবদুর রব ও জিএস আবদুল কুদ্দুস মাখনের সমন্বয়ে `স্বাধীনবাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ` গঠিত হলে নূরে আলম সিদ্দিকী তার শীর্ষস্থানটি দখল করেন ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে।

৭৩-এ `ভিয়েতনাম দিবসে` ডাকসু ভবনে বামপন্থীদের সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর ছবিতে গুলি, তার প্রতিকৃতিতে আগুন দেওয়ার খবরে ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়নের বিরুদ্ধে তিনি গর্জে ওঠেন। সেদিনের সেই দুঃসহ স্মৃতির কথা ভুলতে পারেননি নূরে আলম সিদ্দিকী। তার কথায়, সেদিন মস্কোপন্থীরা বঙ্গবন্ধুর ছবিতে আগুন দিয়ে কী কটূক্তি করেছিলেন, তা মতিয়া চৌধুরীর চেয়ে কেউ ভালো বলতে পারবেন না। কারণ তিনি নিজেই পল্টন ময়দানে উন্মুক্ত সমাবেশে ঘোষণা দিয়েছিলেন `শেখ মুজিবের চামড়া দিয়া ঢোল আর হাড্ডি দিয়া ডুগডুগি` বানানোর। 

জিয়ার খাল কাটা কর্মসূচির ভূয়সী প্রশংসায় মশগুল হয়ে ছুটে গিয়েছিলেন জিয়ার পাশে কোদাল হাতে। এখন সেই মস্কোপন্থীরাই আওয়ামী লীগকে গ্রাস করেছে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মতো নূরে আলম সিদ্দিকীও কমিউনিস্টদের হাত থেকে বাঁচাতে চান আওয়ামী লীগকে।

তিনি কমিউনিস্টদের খপ্পর থেকে শেখ হাসিনাকে মুক্ত করার কথা বলেছেন। একইসঙ্গে তুলাধোনা করেছেন মস্কোপন্থী মতিয়া গংকে। আওয়ামী লীগে তারা `অনুপ্রবেশকারী` হিসেবে অভিহিত। কিছুটা আক্ষেপ রয়েছে প্রবীণ নেতাদের দায়িত্বহীনতায়। তাই তিনি নাম উল্লেখ করে বলেছেন, আমু, রাজ্জাক, তোফায়েল, জলিলদের সঙ্গে কাদের, মান্না, আখতার, জালাল, জাহাঙ্গীর, মান্নান, সুলতানদের সাহস করে শেখ হাসিনার সামনে দাঁড়ানো উচিত। তারা মুখ বন্ধ করে থাকার কারণেই শেখ হাসিনাকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত করে `বাকশাল` গঠনে যারা বঙ্গবন্ধুকে বিভ্রান্ত করেছিলেন সেই কমিউনিস্টরাই ফুলেফেঁপে শেখ হাসিনার হয়ে উঠেছেন।

নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগ বাকশাল হলেও বঙ্গবন্ধুর সেই একদলীয় মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী পদে কমিউনিস্ট মুখ ছিল মাত্র একজন (মস্কোপন্থী ন্যাপের সৈয়দ আলতাফ হোসেন), কিন্তু শেখ হাসিনার বর্তমান মন্ত্রিসভায় কমিউনিস্টদেরই আধিক্য শুধু নয়, সরকারের সব পর্যায়েই তারা আধিপত্য বিস্তার করেছেন। দেশবাসী জানে আমু, রাজ্জাক, তোফায়েল, জলিলদের ইতিহাস-ঐতিহ্য। তারপরও কোনো মূল্যায়ন হয় না।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন