আজিজকে সরিয়ে দিতে খালেদাকে অনুরোধ করেন মঞ্জু


২০০৬ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এমএ আজিজ ও ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ অন্যসব প্রসঙ্গে সরকারি দল বিএনপি ও প্রধান বিরোধীদল আওয়ামী লীগের মধ্যে একপ্রকার কাদাছোড়াছুড়ি শুরু হয়। এসব জানিয়ে ওয়াশিংটনে একটি গোপন তারবার্তা পাঠান ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত কাউন্সিলর ডেভিড রেঞ্জ।
২০০৬ সালের ২০ জুলাই পাঠানো গোপন তারবার্তাটি ফাঁস করেছে উইকিলিকিস। এতে ওই সময়ের সমস্যা মোকাবিলায় উভয় দলের মহাসচিবপর্যায়ের বৈঠক, ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও আলোচিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার এমএ আজিজ প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। বার্তায় ডেভিড উল্লেখ করেন, নির্বাচন কমিশন শেষবারের মতো সুপ্রিমকোর্টের সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের ব্যবসায়িক নেতারা বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে সমঝোতায় পৌঁছাতে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে। ৯ জুলাই নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য ঘরে ঘরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়।


এ সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে আজিজ বলেন, জনগণের চাপের কারণেই এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আর নির্বাচনের আগে এ প্রক্রিয়ায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার পর্যাপ্ত সময় নেই।


আজিজের এ মন্তব্য গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হলে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ নিয়ে ১০ জুলাই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক হয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর। তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতা পোক্ত করতে এসব করছে। এটা গণতন্ত্রকে খাটো করার প্রয়াস মাত্র।


এ সময় চারদলীয় জোটপ্রধান খালেদা জিয়ার সঙ্গে সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর বৈঠক হয় বলে তারবার্তায় উল্লেখ করেন ডেভিড। ৬ জুলাইয়ের বৈঠকটি দুঘণ্টা স্থায়ী হয়। 


এ সময় আওয়ামী লীগ যাতে নির্বাচনে অংশ নেয় বিষয়টি বোঝাতে মঞ্জুকে অনুরোধ জানান খালেদা জিয়া। এ সময় মঞ্জু খালেদাকে আশ্বস্ত করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি আওয়ামী লীগের উপরমহলের সঙ্গে আলাপ করব। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার আজিজকে সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। খালেদাকে এ আহ্বান জানালে তিনি ‘না’ বলেননি। এ সময় অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে খালেদা জিয়াও কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন