আড়াই লাখ মার্কিন তারবার্তা ফাঁস করেছে উইকিলিকস। মার্কিন কূটনীতিকদের ভাষ্যে এসব তারবার্তায় বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশের রাজনীতি ও ক্ষমতার অন্দরমহলের খবর
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় একটি ‘জাতীয় ঐকমত্যের সরকার’ গঠনে আগ্রহী ছিলেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের শীর্ষপর্যায়ের কিছু নেতা। এ নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সেনাবাহিনীর শীর্ষ মহলের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়েছিল। এ জন্য প্রয়োজনে সামরিক শাসন জারি করা হলেও তাঁদের আপত্তি থাকবে না বলে তাঁরা জানিয়ে দেন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই দুই দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ওয়াশিংটনকে এ কথা জানান ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের তৎকালীন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স গীতা পাসি। ২০০৭ সালের ৭ আগস্ট তিনি ওয়াশিংটনে একটি গোপন তারবার্তা পাঠান। গত ৩০ আগস্ট তারবার্তাটি ফাঁস করে দিয়েছে সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকস।
তারবার্তায় বলা হয়, ঢাকার সর্বত্র একটি ‘জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের’ গুঞ্জন চলছে। প্রধান দুই দলের কিছু সংস্কারপন্থী নেতা এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
তারবার্তায় আরও বলা হয়, ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা আমাদের একাধিকবার জানিয়েছেন, একটি ‘জাতীয় ঐকমত্যের সরকার’ আসন্ন। বিএনপির সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপন গত জুনে দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তাকে বিএনপি, আওয়ামী লীগের সংস্কারপন্থী এবং সদ্য গঠিত প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে উপদেষ্টা কাউন্সিল সম্প্রসারণের পরিকল্পনার কথা জানান। এই জোট আগামী নির্বাচনে একটি পৃথক শক্তি হিসেবে নির্বাচন করতে পারে।
খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার বিরোধী বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের সংস্কারপন্থী অন্য নেতারাও সম্প্রতি আমাদের কাছে বিষয়টি তুলেছেন। বিএনপির খালেদাবিরোধী অংশের প্রধান দলের মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া গত ১ আগস্ট দূতাবাসের কর্মকর্তাকে জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। এখন দেশের জন্য একমাত্র সমাধান একটি জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন করা এবং তা প্রায় আসন্ন বলে মনে হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যোগ দিতে পারেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ‘পেশাদার রাজনীতিবিদেরা’। মান্নান ভূঁইয়ার মতে, ‘তাঁরাই (রাজনীতিবিদ) জানে কীভাবে দেশ চালাতে হয়। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সবাই আমলা। তাঁরা দেশের জনগণের মনের কথা বোঝে না।’
তারবার্তায় জানানো হয়, দূতাবাসের কর্মকর্তার সঙ্গে মান্নান ভূঁইয়ার আলোচনার সময় সেখানে জহির উদ্দিন স্বপনও উপস্থিত ছিলেন। তিনি পরে আমাদের বলেছেন, সরকারের ক্ষমতার অংশীদার করা না হলে মান্নান ভূঁইয়ার পক্ষে দলের সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে। তিনি বলেন, ‘কেন আমাদের দলের নেতারা খালেদা জিয়াকে ছেড়ে আমাদের সঙ্গে আসবেন—যতক্ষণ পর্যন্ত না বুঝতে পারছেন আমরা তাঁদের জন্য কিছু করতে পারব।’
তারবার্তায় আরও বলা হয়, জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনে বিলম্ব হওয়ায় সম্প্রতি আমাদের কাছে অধৈর্য প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং শেখ হাসিনার অন্যতম সমালোচক আমির হোসেন আমু। তিনি এমনকি এ কথাও বলেছেন, প্রয়োজনে সামরিক শাসন জারি করা হলেও তিনি এবং তাঁর দলের হাসিনাবিরোধী অন্যান্য নেতা আপত্তি জানাবেন না।
বিএনপির মান্নান ভূঁইয়াপন্থী অংশের নেতা, আবার খালেদা জিয়ার সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী। তিনি দূতাবাসকে জানান, সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদসহ শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্মকর্তারা গত ৫ আগস্ট বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের ব্যাপারে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তাঁদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদ তাঁর জায়গাতেই থাকবেন। তবে সরকারের সঙ্গে যোগ হবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সংস্কারপন্থী এবং পিডিপির নেতারা।
তারবার্তায় আরও বলা হয়, সেনাবাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন—দুর্নীতি দমন কমিশনের এমন এক আইনজীবীও ৫ আগস্টের বৈঠকের বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। তিনিও জানিয়েছেন, জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে এবং সেনা কর্মকর্তারা সর্বসম্মতভাবে রাজি হয়েছেন যে জরুরি অবস্থা জারি না করেই তা করতে হবে।
তারবার্তায় বলা হয়, তবে আমু ও মান্নান ভূঁইয়া আমাদের কাছে বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে কোনো সরকারে যোগ দিতে তাঁরা রাজি হবেন না। কেননা, তিনি (ফখরুদ্দীন) কখনোই সচিব পর্যায়ের ওপরের দায়িত্ব পালন করেননি। অথচ তাঁরা দুজন মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। কাজেই তাঁদের চেয়ে অধস্তন কারও অধীনে তাঁরা কাজ করবেন না।
মন্তব্য: তারবার্তায় দূতাবাসের পক্ষ থেকে মন্তব্য করা হয়, দুই দলের তথাকথিত সংস্কারপন্থী নেতারাই জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের প্রধান উদ্যোক্তা বলে মনে হচ্ছে, যাঁরা তাঁদের দলীয় দুই নেত্রীর বিরোধী। মনে হচ্ছে, নিজেদের দলের বৈধ নেতা হিসেবে তুলে ধরতে ওই সব নেতা মরিয়া। দুই নেত্রীকে সরানোর চেষ্টা করলেও সংস্কারপন্থী ওই সব নেতা এখন এ কথাও ভাবতে শুরু করেছেন যে তাঁদের হিসাব-নিকাশ ভুল হতে পারে এবং দুই নেত্রী ফিরে আসতে পারেন।
এ বিষয়ে আমির হোসেন আমু প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ নিয়ে আর কথা বলতে চাই না। উইকিলিকস বিষয়ে আগেই আমি আমার মতামত জানিয়েছি।’ দেশের বাইরে থাকায় জহির উদ্দিন স্বপনের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় একটি ‘জাতীয় ঐকমত্যের সরকার’ গঠনে আগ্রহী ছিলেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের শীর্ষপর্যায়ের কিছু নেতা। এ নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সেনাবাহিনীর শীর্ষ মহলের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়েছিল। এ জন্য প্রয়োজনে সামরিক শাসন জারি করা হলেও তাঁদের আপত্তি থাকবে না বলে তাঁরা জানিয়ে দেন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই দুই দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ওয়াশিংটনকে এ কথা জানান ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের তৎকালীন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স গীতা পাসি। ২০০৭ সালের ৭ আগস্ট তিনি ওয়াশিংটনে একটি গোপন তারবার্তা পাঠান। গত ৩০ আগস্ট তারবার্তাটি ফাঁস করে দিয়েছে সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকস।
তারবার্তায় বলা হয়, ঢাকার সর্বত্র একটি ‘জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের’ গুঞ্জন চলছে। প্রধান দুই দলের কিছু সংস্কারপন্থী নেতা এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
তারবার্তায় আরও বলা হয়, ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা আমাদের একাধিকবার জানিয়েছেন, একটি ‘জাতীয় ঐকমত্যের সরকার’ আসন্ন। বিএনপির সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপন গত জুনে দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তাকে বিএনপি, আওয়ামী লীগের সংস্কারপন্থী এবং সদ্য গঠিত প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে উপদেষ্টা কাউন্সিল সম্প্রসারণের পরিকল্পনার কথা জানান। এই জোট আগামী নির্বাচনে একটি পৃথক শক্তি হিসেবে নির্বাচন করতে পারে।
খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার বিরোধী বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের সংস্কারপন্থী অন্য নেতারাও সম্প্রতি আমাদের কাছে বিষয়টি তুলেছেন। বিএনপির খালেদাবিরোধী অংশের প্রধান দলের মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া গত ১ আগস্ট দূতাবাসের কর্মকর্তাকে জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। এখন দেশের জন্য একমাত্র সমাধান একটি জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন করা এবং তা প্রায় আসন্ন বলে মনে হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যোগ দিতে পারেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ‘পেশাদার রাজনীতিবিদেরা’। মান্নান ভূঁইয়ার মতে, ‘তাঁরাই (রাজনীতিবিদ) জানে কীভাবে দেশ চালাতে হয়। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সবাই আমলা। তাঁরা দেশের জনগণের মনের কথা বোঝে না।’
তারবার্তায় জানানো হয়, দূতাবাসের কর্মকর্তার সঙ্গে মান্নান ভূঁইয়ার আলোচনার সময় সেখানে জহির উদ্দিন স্বপনও উপস্থিত ছিলেন। তিনি পরে আমাদের বলেছেন, সরকারের ক্ষমতার অংশীদার করা না হলে মান্নান ভূঁইয়ার পক্ষে দলের সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে। তিনি বলেন, ‘কেন আমাদের দলের নেতারা খালেদা জিয়াকে ছেড়ে আমাদের সঙ্গে আসবেন—যতক্ষণ পর্যন্ত না বুঝতে পারছেন আমরা তাঁদের জন্য কিছু করতে পারব।’
তারবার্তায় আরও বলা হয়, জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনে বিলম্ব হওয়ায় সম্প্রতি আমাদের কাছে অধৈর্য প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং শেখ হাসিনার অন্যতম সমালোচক আমির হোসেন আমু। তিনি এমনকি এ কথাও বলেছেন, প্রয়োজনে সামরিক শাসন জারি করা হলেও তিনি এবং তাঁর দলের হাসিনাবিরোধী অন্যান্য নেতা আপত্তি জানাবেন না।
বিএনপির মান্নান ভূঁইয়াপন্থী অংশের নেতা, আবার খালেদা জিয়ার সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী। তিনি দূতাবাসকে জানান, সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদসহ শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্মকর্তারা গত ৫ আগস্ট বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের ব্যাপারে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তাঁদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদ তাঁর জায়গাতেই থাকবেন। তবে সরকারের সঙ্গে যোগ হবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সংস্কারপন্থী এবং পিডিপির নেতারা।
তারবার্তায় আরও বলা হয়, সেনাবাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন—দুর্নীতি দমন কমিশনের এমন এক আইনজীবীও ৫ আগস্টের বৈঠকের বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। তিনিও জানিয়েছেন, জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে এবং সেনা কর্মকর্তারা সর্বসম্মতভাবে রাজি হয়েছেন যে জরুরি অবস্থা জারি না করেই তা করতে হবে।
তারবার্তায় বলা হয়, তবে আমু ও মান্নান ভূঁইয়া আমাদের কাছে বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে কোনো সরকারে যোগ দিতে তাঁরা রাজি হবেন না। কেননা, তিনি (ফখরুদ্দীন) কখনোই সচিব পর্যায়ের ওপরের দায়িত্ব পালন করেননি। অথচ তাঁরা দুজন মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। কাজেই তাঁদের চেয়ে অধস্তন কারও অধীনে তাঁরা কাজ করবেন না।
মন্তব্য: তারবার্তায় দূতাবাসের পক্ষ থেকে মন্তব্য করা হয়, দুই দলের তথাকথিত সংস্কারপন্থী নেতারাই জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের প্রধান উদ্যোক্তা বলে মনে হচ্ছে, যাঁরা তাঁদের দলীয় দুই নেত্রীর বিরোধী। মনে হচ্ছে, নিজেদের দলের বৈধ নেতা হিসেবে তুলে ধরতে ওই সব নেতা মরিয়া। দুই নেত্রীকে সরানোর চেষ্টা করলেও সংস্কারপন্থী ওই সব নেতা এখন এ কথাও ভাবতে শুরু করেছেন যে তাঁদের হিসাব-নিকাশ ভুল হতে পারে এবং দুই নেত্রী ফিরে আসতে পারেন।
এ বিষয়ে আমির হোসেন আমু প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ নিয়ে আর কথা বলতে চাই না। উইকিলিকস বিষয়ে আগেই আমি আমার মতামত জানিয়েছি।’ দেশের বাইরে থাকায় জহির উদ্দিন স্বপনের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন