জিয়াউর রহমান; এক মহানায়ক......১

শহিদ পেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে ইদানিং কিছু বাজে ধারনা তৈরি হচ্ছে তরুন সমাজের মধ্য। এটা স্রেফ সঠিকভাবে ইতিহাস না জানার ফল । জিয়ার ব্যক্তিত্ব, কর্মস্পৃহা এবং আপোষহীন মনোভাব আজও বিশ্ববাসীর কাছে এক উজ্ঝল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। আমি এই পোস্টে সরাসরি ওনাকে নিয়ে যেসব সমালোচনা হয় তার জবাব দেয়ার চেষ্টা করব।তার আগে শুধু একটা কথা বলে নিই জিয়ার বিচক্ষনতা ও সময়ানুযায়ী পদক্ষেপগুলি আজও তাকে জনগনের মাঝে বাঁচিয়ে রেখেছে। পৃথিবীতে একমাত্র জিয়া ই সামরিক বাহিনী থেকে এসেও এতটা জনপ্রিয় শাসকে পরিনত হয়েছিলেন।
তার ভাল দিক নিয়ে বা তার গুনকীর্তন করে এ পোষ্ট লিখব না। এটা স্রেফ তার সম্পর্কে যে সব ভুল ধারনা আছে তা স্পষ্ট করব। আপনারা শুধু ওনার শাসনামল এবং আবির্ভাবের সময়কালের পরিস্থিতি সম্পর্কে একটু গভীরভাবে অনুধাবন করার চেষ্টা না করলে উনি কোন পরিস্থিতে কি করতে চেয়েছেন তা আমার দ্বারা বোঝানো কঠিন হবে।
অভিযোগসমূহঃ
১। জিয়া হত্যাকারী , প্রচুর সৈনিক এবং বিনা বিচারে হত্যার জন্য সে দায়ী।
বিশ্লেষনঃ এই অভিযোগটি ঢালাও ভাবে তার বিরুদ্ধে করা হয় । মুলত সেনাবাহীনির সাথে যারা সম্পৃক্ত তারা হযত কিছুটা জানেন যে জিয়া এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর মধ্যে এক কিংবদন্তির নাম। এবং তার জনপ্রিয়তাও আকাশচুম্বি। সাত নভেম্বর ভোরে যখন জিয়াকে সৈনিকরা মুক্ত করে আনে তখন তাহের সাহেব তাকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। জিয়া ভোর ৫ টায় নিজে ই অধিনায়কের চেয়ারে বসেন। ওদিকে তাহেরের নেতৃত্বে তখনও বিদ্রোহ চলছিল। তাহের সৈনিকদের উত্তেজিত করে তুলেছিলেন। এবং সেনাবাহীনির মধ্যে একমাত্র জিয়াই ছিল যিনি প্রচন্ড সৈনিক বান্ধব বলে পরিচিত ছিলেন। তাই তাহের জিয়ার নাম ব্যবহার করার কোন বিকল্প খুঁজে পাননি।জিয়া দেখলেন সৈনিকরা স্লোগান দিচ্ছে সৈনিক সৈনিক ভাই ভাই অফিসারদের রক্ত চাই। আবার জিয়া জিন্দাবাদ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ ইত্যাদি। সকাল ৬ টায় জিয়া খবর পান যে খালেদ মোশাররফ তাহেরের সৈন্যদের দ্বারা বন্দী অবস্থায় আছেন বর্তমান আসাদ গেটের নিকটে । এ অবস্থা"য় জিয়া তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য হুকুম করেন। কিন্তু কিছুক্ষন পরেই খবর পান যে সেনাপ্রধান খালেদ মোশাররফকে সৈন্যরা গুলি করে মেরে ফেলেছে। এদিকে জিয়া যে ভবনে তখন অবস্থান করছিলেন তার ঠিক পাশের বিল্ডিং এর নীরিহ কিছু অফিসারকে বিনা বিচারে হত্যা করে। প্রত্যেক সৈনিকের হাতে অস্র থাকায় অরাজকতা চরম পর্যায়ে পৌছে। জিয়াকে মুক্ত করার আগেই প্রায় ২০০ অফিসার কে বিপ্লবের নাম করে হত্যা করে তাহের। আর ৭ নভেম্বরেও এই অরাজকতা চালাতে থাকলে জিয়া তা কোনভাবেই সমর্থন করেন নি। সকাল ৮ টায় তাহের নিজে একটি কাগজ হাতে নিয়ে জিযার সাথে দেখা করতে আসে। তখনই সৈন্যদের আত্মসমর্পন করতে বললে জিয়ার সাথে তার কিছুটা তর্ক হয় ।তিনি জিয়াকে ক্ষমতা নিয়ে নিতে বলেন এবং এদেশকে একটি সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ঘোষনা করে বেতারে গিয়ে ভাষন রেকর্ড করতে বলেন। তাহের সৈনিকদের দাবীদাওয়া সম্বলিত একটি কাগজ জিয়ার হাতে তুলে দেন। জিয়া শুধু এ দাবীগুলো বিবেচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু তিনি সমাজতন্ত্র তিনি মেনে নেননি। কারন তাহের ক্ষমতা পাওয়ার পূর্বেই এ হত্যাযজ্ঞ করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে তারা ক্ষমতায় গেলে কি করতে পারেন। যাই হোক, ৭ ও ৮ নভেম্বর ও হত্যাযজ্ঞ অব্যহত থাকায় জিয়া কঠোর হতে বাধ্য হন। তিনি সেনাবাহিনীর মধ্যে চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে ঘোষনা দেন যে যারা অস্র সমর্পন করবে না তাদের বিচার করা হবে । এ ঘোষনার পরেও সম্পুর্ন ব্যক্তিগত আক্রোশে তাহের বাহিনী এক ডাক্তার অফিসার ও তার স্বামীকে হত্যা করে । তখন জিয়া বাধ্য হন তাদের মধ্য থেকে প্রায় ৩০০ জনকে গ্রেফতার করে সামরিক আদালতে সোপর্দ করতে। জিয়ার পুরো শাসনামলে বিনা বিচারে কাউকে মেরে ফেলা হয়নি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন