১৯৭১ এ মক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত অস্ত্রের ছবি ও বিবরন।


৪০ তম বিজয় দিবসের মাসে যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে কিছু তথ্য সংগ্রহ করলাম।
১৯৭১ এ মক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত অস্ত্রের ছবি ও বিবরন।

 
থ্রীনট থ্রী

EPR বাহিনী, থ্রীনট থ্রী হাতে প্রথমবার যশোর দখল করার পর। এপ্রীল ১৯৭১।

থ্রী নট থ্রী .303 রাইফেল। 
ব্রীটিষ Lee enfield co ডিজাইন এবং ব্রীটেন ও কানাডায় নির্মিত, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে বহুল ব্যবহৃত রাইফেল
মুক্তিযুদ্ধকালে সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত যুদ্ধাস্ত্র।২৫মার্চ কালরাতে রাজারবাগ পুলিশলাইনে আক্রমনকারি পাকি বাহিনি কে প্রথম প্রতিহত করা হয় এই থ্রী নট থ্রী রাইফেল দিয়েই। খুবই টেকশই, বিকল হয় না বললেই চলে।১৮৯০সালের ডিজাইনে তৈরি শত বছরের পুরনো অস্ত্রগুলো এখনো চলছে। পুলিশ-আনসারদের হাতে এখনো দেখা যায়।

 
 
M2 স্টেনগান.
ব্রীটেন, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় নির্মিত, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে বহুল ব্যবহৃত কার্বাইন।
M2 9MM স্টেনগান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রীয় অস্ত্র।
পুর্বাঞ্চলে জাপানি আগ্রাসন ঠেকাতে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের শেষদিকে ব্রীটিষ-ভারতিয় বাহিনির হাতে বিপুল পরিমান স্টেনগান মজুদ হয়। দেশ ভাগের পর অস্ত্রগুলো থেকে যায়।
মুক্তিযূদ্ধাদের হাতে আসে EPR বাহিনির সাথে। পর্বরতিতে খন্ডযুদ্ধে আর কিছু স্টেনগান মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আসে।


গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে স্টারলিং সাব মেশিনগান
 
 


Sterling -sub machine gun
ব্রীটিশ নির্মিত, ভারতে সংযোজিত স্টারলিং সাব মেশিনগান । অনেকে এটাকে ভুল করে স্টেনগান বলে, আসলে দেখতে প্রায় একই রকম বলে এই ভুল টা করে।স্টক ভাজ করা যায়। সর্ট রেঞ্জে খুবই কার্যকর ছোট সাব মেশিনগান ।
ঢাকা ভিত্তিক গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রায় সবার হাতেই এই অস্ত্র টি দেখাগেছে।

 

যুদ্ধক্ষেত্রে SLR নিয়ে আক্রমন 

SLR কাঁধে মিত্র ভারতিয় বাহিনী।

L1A1 SLR কম্ব্যাট রাইফেল।
এস এল আর নামে বহুল পরিচিত। ১৯৫৩ সালের বেলজিয়ান FN ডিজাইনে ব্রীটিষ নির্মিত L1A1 SLR কম্ব্যাট রাইফেল।
বুলেটকার্টিজ 7.12 MM
মুক্তুযুদ্ধকালিন নিয়মিত বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের এবং মিত্র ভারতিয় পদাতিক বাহিনীর প্রধান কম্ব্যাট রাইফেল।


 
কালাসনিকভ AK47
বিখ্যাত রুশ কালাসনিকভ এর ডিজাইনে চিনে নকল করে তৈরি করা AK47.
দখলদার পাকিস্তান পদাতিক বাহিনির খুবই কার্যকর অটোমেটিক রাইফেল। পাকিস্তানি আর্মির কমান্ডারের হাতে দেখা যেত
মুক্তিযূদ্ধাদের হাতে আসে মুলত বিদ্রহি বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিকদের মাধ্যমে। ২৫শে মার্চেই ব্যারাকে পাকি সৈন্যদের পরাস্ত করে অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করা হয়।পর্বরতিতে খন্ডযুদ্ধে আর কিছু চাইনিজ AK47 মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আসে।
বাংলাদেশ অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি লাইসেন্স নিয়ে এগুলো এ দেশেই তৈরি করছে। নিয়মত বাহিনি গুলো এবং বিজিবি, RAB, আর্মড পুলিশ, কোষ্টগার্ড এরা সবাই এই অস্ত্র ব্যবহার করছে।

 
 
কাদের সিদ্দিকির বাহিনী একটি অপারেশনে, Bren LMG দেখা যাচ্ছে 
 
এল এম জি Bren MK-lll Light machine gun.
চেকস্লভাকিয়ার ডিজাইনকৃত, ব্রীটেনে নির্মিত।ব্রেনগান নামে ব্যাপক পরিচিত খুবই কার্যকর একটি দু পা ওয়ালা লাইট মেশিনগান । এর বুলেটকার্টিজ থ্রী নটথ্রী রাইফেলের অনুরুপ।
মুক্তিযূদ্ধাদের হাতে আসে EPR বাহিনির সাথে। পর্বরতিতে ভারতিয় বাহিনীর কাছথেকে কিছু এল এম জি ব্রেনগান সংগ্রহ করা হয়

 
ডেগট্রায়ভ RPD Type 56 LMG LMG-RPD-44

রাশিয়ার Vasily Degtyaryov এর ডিজাইনকৃত, পর্বরতিতে চিনে নকল করে তৈরি করা রাউন্ড ব্যারেল LMG
পাকি নিয়মিত বাহিনির প্রধান ‘এল এম জি’। Type 56 এবং Type 44 দুটি মডেল, কিন্তু দেখতে হুবুহু এক।
মুক্তিযূদ্ধাদের হাতে আসে বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিকদের মাধ্যমে। ২৫শে মার্চেই ব্যারাকে পাকি সৈন্যদের পরাস্ত করে অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করা হয়।১০০ রাউন্ড ব্যারেল টাইপ ম্যাগাজিন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখনো এগুলো ব্যাবহার করছে।


 
হেভি মেশিনগান চালানোর ট্রেনিং
 
এইচ এম জি Browning M2
ব্রাউনিং কম্পানির ডিজাইনকৃত যুক্ত্রাষ্ট্রে নির্মিত। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের শেষদিকে ব্রীটিষ-ভারতিয় বাহিনির বহুল ব্যবহৃত হেভি মেশিনগান
মুক্তুযুদ্ধকালিন নিয়মিত সেনা মুক্তিযোদ্ধাদের এবং মিত্র ভারতিয় পদাতিক বাহিনী এবং শত্রু পাকিবাহিনী সবাই হাতেই এই ভারি মেশিনগান ছিল।
কিছু HMG গানবোটেও ফিট করা হয়েছিল।
ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানে এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে। খুবই কার্যকর।
সৌজন্যেঃহাসান কালবৈশাখীর নেট থেকে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন