ভারতের চোরাকারবারী,সিবিআই এর মোস্ট ওয়ান্টেড,মাফিয়া ডন দাউদ ঈব্রাহীমের কথা কমবেশী সবাই জানি।পুলিশ কনস্টেবলের ছেলে দাউদ ঈব্রাহীমের এত বিশাল বিত্তের মালিক হওয়াটা তার নিকটস্হ আত্মীয়স্বজনের কাছে রীতিমত রূপকথার গল্পের মত।ভারতের শেয়ার মার্কেট,ক্রিকেট,মাদক ব্যবসা,চলচ্চিত্র জগৎ সব কিছুতেই রয়েছে তার একাধিপত্য।বর্তমানে অবশ্য তিনি ১৯৯৩ এর মুম্বাই ব্লাস্টের দায়ভার মাথায় নিয়ে পাকিস্তানে বা দুবাইয়ে পালিয়ে আছেন(সিবিআই এর ভাষ্যমতে)।এরপরেও বিদেশ থেকে তিনি ভারতীয় আন্ডারওয়ার্ল্ডের নিয়ন্ত্রণ করেন।
মহারাষ্ট্র রাজ্যের রত্নাগিরিতে জন্ম নেওয়া দাউদ $৬-৭ বিলিয়ন ডলারের মালিক যা তাকে পৃথিবীর ইতিহাসে অপরাধীদের মধ্যে তৃতীয় সর্ব্বোচ্চ ধনীতে পরিণত করেছে।ইন্টারপোলের পেইজ:
Click This Link
বাল্যকালে ও কৈশরে দরিদ্রসন্তান দাউদের ঘরে ভাতের হাঁড়ি থাকতো প্রায়সময় খালি।নিরুপায় দাউদ বড় ভাই সাব্বিরকে নিয়ে স্মাগলিং এর পথ ধরেন।১৯৭৭ সালে করেন ১১ জন সাথীকে নিয়ে হাজী আলী নামক জনৈক ব্যক্তির নৌকায় হামলা করে প্রায় ১৪ লাখ রূপির(বর্তমানের হিসেবে ১কোটি ২৬ লক্ষ) মালামাল লুট করেন,তখনই মাত্র দাউদের পরিবার কাড়ি কাড়ি অর্থের মুখ দেখতে পায়।একেবারে ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই এর ইমরান হাসমীর মত স্বভাব,একটি সেকেন্ড হেন্ডেড শেভ্রলেট নিয়ে মুম্বাই এর রাস্তায় ঘুরতে থাকেন এবং দামী দামী জামাকাপড় পরতে থাকেন।
তরুণ বয়সেই তেল্লী মহল্লার বাসুদাদার বাহিনীর সাথে পাল্লা দেওয়ার উদ্দেশ্যে গঠন করেন বউজী সাহেব ও রামা নায়েকের সহায়তায় নিজস্ব বাহিনী যা পরবর্তীতে ডি-কোম্পানীতে পরিণত হয়।
যারা ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই(ওআটম) দেখেছেন তারা দাউদের জীবনকাহিনী,তার চিন্তাধারার প্রায় সবটাই দেখেছেন।দাউদের উশৃঙ্খল বেআইনী জীবন নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে পিতা পুলিশ কনস্টেবল ইব্রাহীম হাসান কাসকার হাজী মাস্তানের(সুলতান মির্জা ইন ওআটম) কাছে সাহায্য চাইতে যান।হাজী সাহেব তাকে মনিষ মার্কেটে একটি ইলেকট্রনিক্সের দোকানে বসিয়ে দিলেন।কিন্তু বিধি বাম,সৎ পথে দাউদের সন্তুষ্টি মিলে না,শীঘ্রই হাজী মাস্তানের স্মাগলিং এর সম্রাজ্যে নিজেকে জড়িয়ে নেন।এসময় নিজের রাজনৈতিক প্রতিপত্তি বৃদ্ধিসহ সমাজের সম্মানজনক ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠায় উঠে পড়ে লাগেন।পরিচয় হয় পত্রিকার সম্পাদক,রাজনীতিবিদ,ব্যবসায়ী,আইনজীবি,ক্রিকেটার,ফিল্মস্টার সহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সংগে।তাঁর দেওয়া বিভিন্ন পার্টিতে এঁরা অবাধ বিচরণ করতে থাকেন।একচেটিয়াভাবে উপড়ে উঠতে গেলে শত্রু আসবেই,দাউদের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হল না।হাজী মাস্তানের নিকটতম সৈয়দ বাটলা যখন দাউদের বন্ধু উর্দু পত্রিকা ডেইলী রাজদরের সম্পাদক ইকবাল নাটিককে হত্যা করল,দাউদ হাজী মাস্তানের কাছে বিচার চাইতে গেলেন।কিন্তু হাজী এই হত্যার শাস্তি হিসেবে শুধুমাত্র একটি থাপ্পর দিলেন বাটলাকে,যা দাউদ মেনে নিতে পারেন নি।ফলে হাজী মাস্তানের সাথে তাঁর সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ১৯৮০ সালে মুম্বাই এর ভেন্ডীবাজার জাংশন এর সামনে বাটলাকে হত্যা করেন দাউদ।এই ঘটনা তাকে মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতে উপরের দিকে নিয়ে যায়।
তাঁর সাথে সত্যিকারের বন্ধুত্ব কারো হত না।সবসময় নিজের লাভটাই তার নজরে আসত,বললেন তারই নিকটবর্তীরা যারা তাকে ছোট থেকে চেনেন।পরবর্তীতে করিম লালা গ্যাংয়ের জন্য কাজ করলেও তার সাথেও বেশীদিন থাকেন নি।পরবর্তীতে গড়ে তোলেন নিজস্ব গ্যাং
ডি-কোপম্পানী।এভাবেই ধীরে ধীরে তাঁর গ্যাংয়ে আসতে থাকে ছোটা শাকিল,ছোটা রাজন,আবু সালেম প্রভৃতি ভয়ংকর অপরাধীরা।তার ক্রমশ বর্ধমান অপরাধের ছোঁয়া গিয়ে লাগতে থাকে শেয়ার মার্কেট,সরকারী অফিস,ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি,ক্রিকেট সহ নানা লাভজনক স্হানে।
Click This Link
তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে থাকেন বাজিকরদের বাজির টাকা।বলা হয়ে থাকে অনেক ভারত,পাকিস্তান,সাউথআফ্রিকা ম্যাচের ফলাফলের ভাগ্য নির্ধারিত হত তাঁর ঈশারায়।যেখানে খেলোয়াড়রা রাজী হতনা সেখানেই ডাক পড়ত দাউদের।দাউদের একটি কল মানেই ছিল মানো নাহলে নিশ্চিৎভাবে মর।কিছুদিন আগে এমন কথাও উঠেছিল যে ভারত-শ্রীলংকাবিশ্বকাপ২০১১ ফাইনাল ম্যাচটিতে দাউদের ইশারায় খেলা পরিচালনা করেন ধনী এবং সাংগাকারা দুজনই। http://www.youtube.com/watch?v=SRBThYtpd78 ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও তিনি বিনিয়োগ করেন।সালমান খান অভিনীত চোরি চোরি চুপকে চুপকে তে দাউদের বিনিয়োগ করার অভিযোগের রিপোর্ট সিবিআই ও সিআইডির কাছে আছে।তবে বলিউড দাউদের নৃশংস থাবা দেখতে পায় যখন দাউদের চর আবু সালেম সঙ্গীত পরিচালক গুলশান কুমারকে হত্যা করে।২০০০ সালে একবার আমির খানের গাড়িতেও হামলা করে দাউদ বাহিনী,তবে দক্ষ বডিগার্ডরা পাল্টা গুলি চালালে ঘটনাস্হলেই নিহত হয় হামলাকারীদের ৪ জন।
সেই যাত্রায় বেঁচে যান "গজীনি","রং দে বসন্তী" খ্যাত আমির।
সূত্র:
http://en.wikipedia.org/wiki/Dawood_Ibrahim
দাউদের মেয়ের সাথে বিয়ে হয়েছে সাবেক পাকিস্তানী ব্যট্সম্যান জাভেদ মিয়াদাদের ছেলের।দুবাইয়ের একটি বিলাসবহুল হোটেলে তাদের বিয়ে হয় শান্তিপূর্ণভাবে।যথারীতি সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা অনুষ্ঠানে গুপ্তচর বেশে উপস্হিত থাকলেও দাউদকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নি।তাকে নিয়ে তৈরী করা চলচ্চিত্রগুলো হল: ডি, কোম্পানি,ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই।
মহারাষ্ট্র রাজ্যের রত্নাগিরিতে জন্ম নেওয়া দাউদ $৬-৭ বিলিয়ন ডলারের মালিক যা তাকে পৃথিবীর ইতিহাসে অপরাধীদের মধ্যে তৃতীয় সর্ব্বোচ্চ ধনীতে পরিণত করেছে।ইন্টারপোলের পেইজ:
Click This Link
বাল্যকালে ও কৈশরে দরিদ্রসন্তান দাউদের ঘরে ভাতের হাঁড়ি থাকতো প্রায়সময় খালি।নিরুপায় দাউদ বড় ভাই সাব্বিরকে নিয়ে স্মাগলিং এর পথ ধরেন।১৯৭৭ সালে করেন ১১ জন সাথীকে নিয়ে হাজী আলী নামক জনৈক ব্যক্তির নৌকায় হামলা করে প্রায় ১৪ লাখ রূপির(বর্তমানের হিসেবে ১কোটি ২৬ লক্ষ) মালামাল লুট করেন,তখনই মাত্র দাউদের পরিবার কাড়ি কাড়ি অর্থের মুখ দেখতে পায়।একেবারে ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই এর ইমরান হাসমীর মত স্বভাব,একটি সেকেন্ড হেন্ডেড শেভ্রলেট নিয়ে মুম্বাই এর রাস্তায় ঘুরতে থাকেন এবং দামী দামী জামাকাপড় পরতে থাকেন।
তরুণ বয়সেই তেল্লী মহল্লার বাসুদাদার বাহিনীর সাথে পাল্লা দেওয়ার উদ্দেশ্যে গঠন করেন বউজী সাহেব ও রামা নায়েকের সহায়তায় নিজস্ব বাহিনী যা পরবর্তীতে ডি-কোম্পানীতে পরিণত হয়।
যারা ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই(ওআটম) দেখেছেন তারা দাউদের জীবনকাহিনী,তার চিন্তাধারার প্রায় সবটাই দেখেছেন।দাউদের উশৃঙ্খল বেআইনী জীবন নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে পিতা পুলিশ কনস্টেবল ইব্রাহীম হাসান কাসকার হাজী মাস্তানের(সুলতান মির্জা ইন ওআটম) কাছে সাহায্য চাইতে যান।হাজী সাহেব তাকে মনিষ মার্কেটে একটি ইলেকট্রনিক্সের দোকানে বসিয়ে দিলেন।কিন্তু বিধি বাম,সৎ পথে দাউদের সন্তুষ্টি মিলে না,শীঘ্রই হাজী মাস্তানের স্মাগলিং এর সম্রাজ্যে নিজেকে জড়িয়ে নেন।এসময় নিজের রাজনৈতিক প্রতিপত্তি বৃদ্ধিসহ সমাজের সম্মানজনক ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠায় উঠে পড়ে লাগেন।পরিচয় হয় পত্রিকার সম্পাদক,রাজনীতিবিদ,ব্যবসায়ী,আইনজীবি,ক্রিকেটার,ফিল্মস্টার সহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সংগে।তাঁর দেওয়া বিভিন্ন পার্টিতে এঁরা অবাধ বিচরণ করতে থাকেন।একচেটিয়াভাবে উপড়ে উঠতে গেলে শত্রু আসবেই,দাউদের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হল না।হাজী মাস্তানের নিকটতম সৈয়দ বাটলা যখন দাউদের বন্ধু উর্দু পত্রিকা ডেইলী রাজদরের সম্পাদক ইকবাল নাটিককে হত্যা করল,দাউদ হাজী মাস্তানের কাছে বিচার চাইতে গেলেন।কিন্তু হাজী এই হত্যার শাস্তি হিসেবে শুধুমাত্র একটি থাপ্পর দিলেন বাটলাকে,যা দাউদ মেনে নিতে পারেন নি।ফলে হাজী মাস্তানের সাথে তাঁর সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ১৯৮০ সালে মুম্বাই এর ভেন্ডীবাজার জাংশন এর সামনে বাটলাকে হত্যা করেন দাউদ।এই ঘটনা তাকে মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতে উপরের দিকে নিয়ে যায়।
তাঁর সাথে সত্যিকারের বন্ধুত্ব কারো হত না।সবসময় নিজের লাভটাই তার নজরে আসত,বললেন তারই নিকটবর্তীরা যারা তাকে ছোট থেকে চেনেন।পরবর্তীতে করিম লালা গ্যাংয়ের জন্য কাজ করলেও তার সাথেও বেশীদিন থাকেন নি।পরবর্তীতে গড়ে তোলেন নিজস্ব গ্যাং
ডি-কোপম্পানী।এভাবেই ধীরে ধীরে তাঁর গ্যাংয়ে আসতে থাকে ছোটা শাকিল,ছোটা রাজন,আবু সালেম প্রভৃতি ভয়ংকর অপরাধীরা।তার ক্রমশ বর্ধমান অপরাধের ছোঁয়া গিয়ে লাগতে থাকে শেয়ার মার্কেট,সরকারী অফিস,ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি,ক্রিকেট সহ নানা লাভজনক স্হানে।
Click This Link
তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে থাকেন বাজিকরদের বাজির টাকা।বলা হয়ে থাকে অনেক ভারত,পাকিস্তান,সাউথআফ্রিকা ম্যাচের ফলাফলের ভাগ্য নির্ধারিত হত তাঁর ঈশারায়।যেখানে খেলোয়াড়রা রাজী হতনা সেখানেই ডাক পড়ত দাউদের।দাউদের একটি কল মানেই ছিল মানো নাহলে নিশ্চিৎভাবে মর।কিছুদিন আগে এমন কথাও উঠেছিল যে ভারত-শ্রীলংকাবিশ্বকাপ২০১১ ফাইনাল ম্যাচটিতে দাউদের ইশারায় খেলা পরিচালনা করেন ধনী এবং সাংগাকারা দুজনই। http://www.youtube.com/watch?v=SRBThYtpd78 ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও তিনি বিনিয়োগ করেন।সালমান খান অভিনীত চোরি চোরি চুপকে চুপকে তে দাউদের বিনিয়োগ করার অভিযোগের রিপোর্ট সিবিআই ও সিআইডির কাছে আছে।তবে বলিউড দাউদের নৃশংস থাবা দেখতে পায় যখন দাউদের চর আবু সালেম সঙ্গীত পরিচালক গুলশান কুমারকে হত্যা করে।২০০০ সালে একবার আমির খানের গাড়িতেও হামলা করে দাউদ বাহিনী,তবে দক্ষ বডিগার্ডরা পাল্টা গুলি চালালে ঘটনাস্হলেই নিহত হয় হামলাকারীদের ৪ জন।
সেই যাত্রায় বেঁচে যান "গজীনি","রং দে বসন্তী" খ্যাত আমির।
সূত্র:
http://en.wikipedia.org/wiki/Dawood_Ibrahim
দাউদের মেয়ের সাথে বিয়ে হয়েছে সাবেক পাকিস্তানী ব্যট্সম্যান জাভেদ মিয়াদাদের ছেলের।দুবাইয়ের একটি বিলাসবহুল হোটেলে তাদের বিয়ে হয় শান্তিপূর্ণভাবে।যথারীতি সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা অনুষ্ঠানে গুপ্তচর বেশে উপস্হিত থাকলেও দাউদকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নি।তাকে নিয়ে তৈরী করা চলচ্চিত্রগুলো হল: ডি, কোম্পানি,ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন