সুইডেন এ বাংলাদেশীরা ১
সুইডেন এ বাংলাদেশীরা বড় ই অদ্ভুত।
ওন্নান্য সব বিদেশীদের মধ্যে একটা মিল পাবেন, কিন্তু বাংলাদেশী দের মধ্যে কোন মিল ই পাওয়া যায় না। বিভিন্ন দেশি বিদেশীরা নিজ দেশের লোক দেখলে, দাড়ায়, কথা বলে; কিন্তু বাংলাদেশীদের মধ্যে এ সবের বালাই নাই। কোথায় জেনো একটা অদৃশ্য দেয়াল, কাজ করুক আর বেকারভাতা খাক কিংবা কালো কাজ করুক, ভাবটা যেন ভীষন ব্যস্ত। তারপর যদি দয়া করে কথা বলেন, টের পাবেন ভীষন ইন্টেলেকচুয়াল এবং সব জান্তা লোকের দেখা পেয়েছেন আপনি।
পরে এই আমাদের বাংলাদেশী দের ব্যপারে আরো লিখার ইচ্ছা আছে।
সুইডেন এ বাংলাদেশীরা ২
ধন্যবাদ সবাইকে, লেখা পড়ার জন্য।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে এর পেছনে কিছু কারন খুজে পেয়েছি....
১। ৭৫ পর যারা প্রথম সুইডেন আসেন, তারা কোন গাইড লাইন দিতে পারেননি পরবত্তী প্রজন্মের জন্য
২।তারা নিজেরাই মারামারি, কাঁদা ছো্ড়াছুড়ীতে জড়ি্যে পড়েন যা থেকে পরবত্তী প্রজন্মেরা শিখে
৩।দেশ এ সামাজিক স্টাটাস ও শিক্ষা
৪।বসে-বসে বেকারভাতা পাওয়া ও খাওয়া(অলস মস্তিস্ক শয়তানের কারখানা)
এই কয়েকটা বিষয়ে আমি পরে আলোকপাত করবো
সুইডেন এ বাংলাদেশীরা -৩
তো যা বলছিলাম,সুইডেন এ বাংলাদেশীরা ৭৫এর পর যারা প্রথম সুইডেন আসেন, তারা কোন গাইড লাইন দিতে পারেননি পরবত্তী প্রজন্মের জন্য।এসে ই শুনেন এখানে সবাই সমান, কেউ কারো care off এ নাই। এসেই দেখেন যে, এখানে কাজ না করে ও টাকা , বাড়ী ভাড়া,টেলিফোন বিল,কারেন্ট বিল, ডাক্তার, ঔষধ এর বিল ও পাওয়া যায় ওয়েলফয়ার থেকে, পারমিশন পাওয়া মাত্র ই তারা যেন বিরাট ঊচু জমিদার বংশের লোক বনে যান।ভাব টা এমন যে,যেন বিরাট ঊচু ফ্যমিলী থেকে দয়া করে এখানে এসেছেন। বাড়ীতে ৫তালা পুকুর আর ৬ তালা গোয়াল ঘর রেখে এসেছেন।অথচ ঢাকা শহর তো ভাল, নিজের জেলা শহর ও দেখেন নি।আমি এক লোককে চিনি তার নিজের মুখে বলেছেন যে তিনি তার গ্রামের এক টেইলার এর দোকান এ হেল্পার ছিলেন,অথচ পারমিশন পাওয়ার পর ই শুনছি তিনি নাকি বিরাট বড় এক ফ্যমিলীর ছেলে। আর এক জন আছেন যিনি বাংলাদেশের এক দুর্গম জেলা শহর থেকে এসেছেন, দেশে পণির বা chease দেখেনই নাই নাম ও শোনেন নাই,এখন পণির ছাড়া তার নাস্তা হয় না;তবে তিনি এখন ও পণির চিনেন না, chease চিনেন। মাংসের কিমা কে বলতেন নুডল্স মাংস, হাতে দুধ কিংবা কোক নিয়ে BAR এ যেতেন মেয়ে বান্দ্ববী খোজার জন্য।এ কারনে এক বার তাকে বার থেকে বের করে ও দেয়া হয়। তো কিছু দিন আগে তিনি বললেন, তিনি তো দেশে থাকতেই BAR এ যেতেন,Brand এর জামা কাপড় ও নাকি দেশে ও পড়তেন।শুনে কাদবো নাকি হাসবো?এমন ওনেক মানুষ ই সুইডেন এ পাওয়া যাবে।
আসার পর দেখলেন সরকার থেকে ও বাচ্চার জন্য ভাতা ও দেয়;.কি মজা ! তারা নিজেদের আত্নীয়-স্বজন নিয়ে আসলেন কেউ আদম ও নিয়ে এলেন। টাকা আর টাকা... শুরু করলেন মদ, মেয়ে, জু্য়া (অবশ্য ই সবাই নন)।শুরু হল সমস্যা পরিবারে, কেউ কেউ ডিভোর্স হলেন, কেউ সেপারেট হলেন ও প্রতিদিন থানা-পুলিশ করলেন।যারা এই ২ রকম কাহিনীর মধ্যে পড়লেন, তারা যেন একটা অলিখিত চুক্তিতে সমিতি গড়লেন যে, যারা সুখে সংসার করছে, ওদের সংসার ও ভাংতে হবে এবং ভাঙলেন ও ভেঙেছেন অনেকের সংসার। এখানে এক ধরনের পুরুষ ও মহিলা আছেন যারা ডিভোর্স , তাদের মাথায় সব সময় চিন্তা থাকে কি করে অন্যের ঘর ভাংগা যায়?
দ্বিতীয় দলে আছেন, যারা ঘর ভাঙগি-ভাঙগি করছেন, এক ই ছাদের নীচে দুইজন দুই বিছানায় থাকেন, তোমার টাকা তোমার,-আমার টাকা আমার এই সিস্টেমে । যে যার মেয়ে/ছেলে বন্দুর সাথে থাকেন, আবার বাচ্চার ও জন্ম দেন। এরা প্রায় ই পুলিশের কাছে কমপ্লিন করেন ও দৌড়ান, এরা ছাড়াছাড়ি করতে চান না, তবে তাদের ও টাগ্রেট থাকে কেউ যেন ভাল না থাকতে পারেন। শেষ ও তৃতী্য় দলে যারা আছেন তারা, যারা কারো কাছেই যাবেন না; নিজ ও নিজেদের নিয়ে, ঘর-সংসার নি্য়ে ই তারা ব্যস্ত।
এক ধরনের লোক আছেন যারা পেনশন নিয়ে আছেন। সুস্হ্য মানুষ কিন্তু পেনশন নিয়ে আছেন অসুস্হ্য এর ভান করে। মাসে-মাসে পেনশন পান সরকার থেকে, অথচ জীবনে ও কোনো কাজ করেননি, স্যুট পরে পেছনে হাত বেধে ভাষন দিয়ে বেড়ান। হালাল জবাই করা মাংস খেতে চান না। আর পেনশন পাবার দিন ই তারা মদের পার্টি দেন, আর রাতে বাসায় এসে বৌ-বাচ্চা পেটান।
সমিতি করেন, এমন লোক ও আছে প্রচুর। সুইডেনে কত বাংলাদেশী, আর কত যে সমিতি আছে কে জানে?এর কারন ও আছে, সমিতি করলে সরকার থেকে অনুদান পাওয়া যায়। সমিতি নিয়ে কত ঘটনা আর মারামারি হয়েছে, তার খবর কে রাখে? এক সমিতির সরকারি অনুদান পেলেই টাকার ভাগাভাগী নিয়ে মারামারি, তারপর নতুন নতুন সমিতি গড়ে উঠে। আর এতে যোগ দেন তাদের অনুসারীরা ও নতুন আস্যাইলামসীকাররা।
আরেক ধরনের মানুষ আছেন, যারা আস্যাইলামসিকারদের বাসায় দাওয়াত করে খাওয়ান, আর কয়েক বার দাওয়াতের পর টাকা ধার নেন; পরব্তীতে ধার নেয়া টাকা ফের্ৎ চাইলেই হুমকি বা পুলিশে ধরিয়ে দেন।
এখানে বেশীর ভাগ বাংলাদেশীরা রেস্টুরেন্ট এর ব্যবসা করেন বা কাজ করেন।রেস্টুরেন্টের ব্যবসাটা ও অনেকটা সমিতির মতো, অথ্রনৈতিক কারনেই অনেকেই রেস্টুরেন্ট এ কাজ করেন।খুব ই কম বেতন দেন মালিকরা, দেশের বাড়ীর কাজের লোকের মত ই স্টাফের সাথে ব্যবহার তাদের। একেবারে কিছু না করার চেয়ে অল্প বেতনে ই বাধ্য হয়ে কাজ করতে হয় নতুন আসা একজনকে।আর মালিকরা ও ১৬ আনার ২০আনা উসুল করে নেন তাদের দেশী ভাইদের কাছ থেকে।
পরশ্রী কাতরতা বাংলাদেশীদের যেন একটু বেশী। কেউ যদি ভাল চাকুরী করেন, তার নিজের পা যেমন মাটিতে পড়ে না, আবার অন্যরা ও সমালোচনা করে। পড়তে আসা বাংলাদেশী ছাত্ররা ওনেকটা পরিস্হিতির শিকার। কেউ কেউ মনে করেন এখানে থাকা সবাই যেন লেবার শ্রেনীর, তিনি একাই লেখাপড়া জানা বাকি সবাই নিন্মশ্রেনীর; তবে বেশির ভাগ ছাত্রই এখানে থাকা লোকদের কাছ থেকে অবহেলার শিকার এবং তার কারনে তারা এখানে থাকা বাংলাদেশীদের সাথে মিশতে ভয় পায়।
সুইডেনে বাংলাদেশীদের কাহিনী আরো আসছে.....।
সবাই কে শুভেচ্ছা ..।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন