
১৯৩০ সালের দিকে হৃষিকেশ দাস এর নির্মাণকাজ শুরু করেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের দুর্লভ সব গোলাপ গাছে সুশোভিত করেন এ উদ্যানটি।
গার্ডেনটি পুরান ঢাকার ১৩ নং কে এম দাস লেনে অবস্থিত। এ
সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে স্মৃতিবিজড়িত এ গার্ডেন। ১৯৪৯ সালে এ গার্ডেনে যাত্রা শুরু হয়েছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ নামের একটি রাজনৈতিক দলের । হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শামসুল হকের হাতে গড়া এই সংগঠনটিই পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ নামে আত্মপ্রকাশ করে।
আমন্ত্রণ ছাড়াই ঢাকার তৎকালীন ধনী ব্যবসায়ী হৃষিকেশ দাস একদিন বলধার এক অনুষ্ঠানে গিয়ে হাজির হন। হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী নিম্নবর্ণের হওয়ায় তাকে অপমান করা হয়। একই রকম বাগানবাড়ি নির্মাণ করে এর প্রতিশোধ নিতে প্রতিজ্ঞা করেন হৃষিকেশ দাস। আর এভাবেই বলধার জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর বাগানবাড়ির আদলে নির্মিত হয় রোজ গার্ডেন।
২২ বিঘা জায়গাজুড়ে নির্মিত এ গার্ডেনটিতে চীন, ভারত, জাপান ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে মাটিসহ গোলাপের চারা এনে রোপণ করেন ব্যবসায়ী হৃষিকেশ দাস।
বাগানের প্রধান গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে একটি শানবাঁধানো পুকুর। গেট, পুকুর ও বাগানে ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত অনেকগুলো ভাস্কর্য। বাগানের পুরো সীমানাজুড়ে আম গাছের সারি ও মাঝখানে অবস্থিত কারুকার্যময় দ্বিতল এ ভবনটি। এ ছাড়া বাগানে মার্বেল পাথরের মূর্তি ও কৃত্রিম ফোয়ারাও ছিল।
বাগানে এখনো বেশ কয়েকটি শ্বেতপাথরের মূর্তি আছে। তবে বেশির ভাগ মূর্তিই বাড়ির ভেতরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মূল বাড়ির সামনে সুদৃশ্য একটা ঝরনা ছিল, যার ভগ্নাংশটি এখনো রয়ে গেছে। এখন বাড়ির ঠিক সামনেই একটা পুকুর আছে। ওপর দিকে রয়েছে বেশ কিছু তালগাছের সারি। প্রাসাদের নিচতলায় একটি বড় হলঘরসহ আটটি কামরা আর ওপরের তলায় একটা বড় নাচঘরসহ পাঁচটি কামরা আছে।
স্থাপত্যিক আশ্চর্য ‘রোজ গার্ডেন’। হৃষিকেশ বাবু পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের দুর্লভ সব গোলাপ গাছে সুশোভিত করেছিলেন এ বাগান। পুরো এলাকা সাজিয়েছিলেন ইউরোপীয় ঢঙে। ভবনটির অবাক করা নির্মাণশৈলী আর মুগ্ধ করা নকশা সবার মন কাড়ে। পরবর্তী সময়ে তৎকালীন হিন্দু সমাজের উচ্চবিত্ত ও জমিদারদের আড্ডা জমতে থাকে রোজ গার্ডেনকে ঘিরে। সে সময় সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে ঋষিকেশ ও রোজ গার্ডেনের নাম। তখন বহু উৎসুক মানুষ রোজ গার্ডেন দেখতে আসতেন।
ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন ব্যবহার হয়ে আসছে নাটক ও টেলিফিল্ম-এর শুটিং স্পট হিসেবে। এখানে সত্তরের দশকের জনপ্রিয় ছবি মুস্তাফিজ পরিচালিত হারানো দিন চিত্রায়িত হয়েছিল। শবনম, রহমান ও গোলাম মুস্তাফা প্রমুখ ছিলেন ছবির পাত্রপাত্রী। পরে এখানে আরো অনেক ছবির চিত্রায়ণ হয়েছে। রোজ গার্ডেনের সৌন্দর্য এখন বিভিন্ন নাটক ও টেলিফিল্মে দেখা যায়।
এ তো গেল রোজ গার্ডেনের কথা, এবার রশিদ মঞ্জিল হয়ে ওঠার কথা। সেটা এ রকম :
ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন ব্যবহার হয়ে আসছে নাটক ও টেলিফিল্ম-এর শুটিং স্পট হিসেবে। এখানে সত্তরের দশকের জনপ্রিয় ছবি মুস্তাফিজ পরিচালিত হারানো দিন চিত্রায়িত হয়েছিল। শবনম, রহমান ও গোলাম মুস্তাফা প্রমুখ ছিলেন ছবির পাত্রপাত্রী। পরে এখানে আরো অনেক ছবির চিত্রায়ণ হয়েছে। রোজ গার্ডেনের সৌন্দর্য এখন বিভিন্ন নাটক ও টেলিফিল্মে দেখা যায়।
এ তো গেল রোজ গার্ডেনের কথা, এবার রশিদ মঞ্জিল হয়ে ওঠার কথা। সেটা এ রকম :
ঋণের দায়ে হৃষিকেশ দাস তার সম্মানের প্রতীক এই জৌলুসপূর্ণ বাগানবাড়িটি ১৯৩৬ সালে ব্যবসায়ী খান বাহাদুর মৌলভী কাজী আবদুর রশীদের কাছে বিক্রি করে দেন। কাজী আবদুর রশীদ এ প্রাসাদে প্রভিন্সিয়াল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এরপর ১৯৬৬ সালে আবদুর রশীদের বড় ভাই কাজী হুমায়ুন বশীর এই রোজ গার্ডেনের মালিকানা লাভ করেন। এ সময় বাড়িটি তার নামানুসারে হুমায়ুন সাহেবের বাড়ি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
কাজী হুমায়ুন ১৯৭০ সালে তৎকালীন স্বনামধন্য চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা বেঙ্গল স্টুডিও ও মোশন পিকচার্স লি: এর কাছে বাড়িটি লিজ দেন। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ রোজ গার্ডেনকে সংরক্ষিত ভবন বলে ঘোষণা করে। ১৯৯৩ সালে বাড়িটির অধিকার ফিরে পান কাজী রকিব ও হুমায়ুন সাহেবদের বংশধররা। বাড়িটির বর্তমান মালিক কাজী রকিব ও তার স্ত্রী লায়লা রকিব। বর্তমানে এটি রশিদ মঞ্জিল নামে পরিচিত।
কাজী হুমায়ুন ১৯৭০ সালে তৎকালীন স্বনামধন্য চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা বেঙ্গল স্টুডিও ও মোশন পিকচার্স লি: এর কাছে বাড়িটি লিজ দেন। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ রোজ গার্ডেনকে সংরক্ষিত ভবন বলে ঘোষণা করে। ১৯৯৩ সালে বাড়িটির অধিকার ফিরে পান কাজী রকিব ও হুমায়ুন সাহেবদের বংশধররা। বাড়িটির বর্তমান মালিক কাজী রকিব ও তার স্ত্রী লায়লা রকিব। বর্তমানে এটি রশিদ মঞ্জিল নামে পরিচিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন